দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সেতুর পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রেলসেতুটি উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম।

এর ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। এদিন মাত্র সাড়ে তিন মিনিটেই রেল সেতু অতিক্রম করে স্পেশাল ট্র্রেনটি।

এরআগে, ৬ কোচের (বগির) এই স্পেশাল ট্রেন প্রস্তুতের পর সজ্জিত করা হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মি. সাইদা শিনিচি, জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক মি. ইতো তেরুয়ুকি প্রমুখ।

দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন

এসময় উপস্থিত ছিলেন- যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরিফা হক, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান প্রমুখ।

এরপর সেতুর পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে সিরাজগঞ্জ পশ্চিম প্রান্তের সয়দাবাদ রেলস্টেশন পর্যন্ত উদ্বোধনী ট্রেনে অতিথি ও সংশ্লিষ্টরা যমুনা রেল সেতু অতিক্রম কবরে। পরে সয়দাবাদ রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। সেখানে সংবাদ সম্মেলন শেষে ট্রেনটি ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন পূর্ব প্রান্তে ফিরে আসবে।

রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরুয়ুকি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

৫০টি পিলার আর ৪৯টি স্প্যানের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির অবকাঠামোতে দাঁড়িয়ে থাকা ডাবল ট্র্যাকের সেতুটি শত বছরের স্থায়িত্বের অঙ্গীকারে মাথা উঁচু করে জানান দিচ্ছে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রার কথা।

জাপানি নিত্য নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি এই সেতু দেশের অন্য সকল সেতুর থেকে আলাদা। সেতুতে রয়েছে ডাবল ট্র্যাক ও দুইপাশে দুটি আধুনিক স্টেশন। সেতুর ডেকের নিচে রয়েছে গ্যাস পাইপ লাইন, বিদ্যুৎ-লাইন যা উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জাপান বাংলাদেশর যৌথ উদ্যোগে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ ও আধুনিক রেল সেতুর। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রায় ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুটি কেবল একটি প্রকৌশলগত বিস্ময় নয়।

এটি যোগাযোগ, বাণিজ্য এবং অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। সেতু নির্মাণে খুশি উত্তর বঙ্গের যাত্রীরা। তবে দুই প্রান্তে সিঙ্গেল ট্রাকের কারণে আধুনিক এই সেতুটি পুরোপুরি সুফল পাওয়া যাবে না। তাই দুই প্রান্তেই দ্রুত ডাবল ট্র্যাকের কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।